ঠাকুমা ভালবেসে নাম রেখেছিলেন তানি আর মুনি। তা সে বছর ছয়েক আগের কথা। ছোট থেকে গান শুনলে চুপ করে যেত দু’জনেই।
বছর তিনেক আগের এক দিনের কথা। সেদিন মধ্যমগ্রামে মায়ের কোলে শুয়ে ফোনে বাবার গলায় ‘প্যায়ার মাঙ্গা হ্যায় তুমহি সে..’কিশোর কুমারের গান,
শুনে মশগুল হয়ে গিয়েছিল দুই বোন। এমনকি বাবার গলায় গান শুনে তারা নাকি নিজেরাই নকল শুরু করেছিল। ভাল নাম শ্রেয়া দত্ত আর সৃস্টি দত্ত।
পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়র দেবাশিস দত্তের দুই মেয়ে। কর্মসূত্রে তিন বছর আগে তিনি তখন ব্যাঙ্গালুরুতে। স্ত্রীর কাছে জানতে পারেন, ফোনের ওপারে তাঁর গানের গলা নকল করে ফেলেছে দুই মেয়ে। আদ আদ মিঠে সুরে মোহিত তখন দেবাশিস। সুপ্ত বাসনা বারবার ফিরে আসতে লাগল। শহরে ফিরেই দুই মেয়েকে গান গেয়ে শোনাতে লাগলেন। সা রে গা মা পা-এর ধারাপাত না জানা দুই সন্তান সহজেই রপ্ত করে ফেলল একের পর এক গান।
আর এর পর থেকে সকলের মনে জায়গা করে নিল তানি-মুনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন প্রায় সকলেই ছোট্ট দুই বোন তানি আর মুনিকে চেনে। বর্তমানে জি বাংলা সারেগামাপা ২০২২-এর মঞ্চে দেখা যাচ্ছে ছোট্ট তানি মুনিকে। সেখানেও তার গান শুনে মুগ্ধ হচ্ছেন সকল বিচারকরা। মাঝেমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তানিয়ার মুনির নানান গানের ভিডিও ভাইরাল হয়। সম্প্রতি কিছু মাস আগের তাঁদের একটি গান গাওয়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পুনরায় ভাইরাল হয়েছে।
সম্প্রতি “প্রাণ সখিরে” গানটি তাদের গাড়িটি দেখা গেল এই ভিডিওতে। এত সুন্দর এবং সাবলীলভাবে এই গান কার আগে শুনিয়েছে যা আসনে মুগ্ধ হতে বাধ্য হয়েছে নেটদুনিয়ার সকল মানুষ। জনপ্রিয় এই গান ওদের নিজস্ব ভঙ্গিতে দ্বৈত কণ্ঠে গেয়েছে তানি-মুনি, আর তাতেই নেটিজেনদের মন কেড়ছে ওরা। কেবল গান গাওয়াই নয়, তার সঙ্গে আস্ত সেই মিউজিক ভিডিওতে নিজেরাই অভিনয় করে দুই খুদে। তাদের এই গান দেখে অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন উঠতে দেখা যায় কিভাবে এই অল্প বয়সে গানের জগতকে এতটা রপ্ত করে ফেলল তারা? আসলে এই রপ্ত করে ফেলার পিছনে রয়েছে তাদের বাবা ও মায়ের অনুপ্রেরণা, ভালোবাসা, এগিয়ে যাওয়ার সাহস সঞ্চার। ভিডিওতে দেখা গেছে গান গাওয়ার সময় তাদের দুজনের পরনে রয়েছে শাড়ি। একজন পড়ে আছে লাল রঙের শাড়ি আর আরেকজন পড়ে আছে সবুজ রঙের শাড়ি।
দুজনকেই এই শাড়ির সাথে খুবই মিষ্টি লাগছে আর সাথে হয়েছে তাদের মিষ্টি গান। দেখা গেছে শাড়ির সাথে দুজনের হাতেই ম্যাচিং করা চুরি মাথায় টিকলি আর হালকা করে ঠোঁটে লিপস্টিক। এদিকে দেখা গেছে পায়ে লাল করে আলতা আর ঘুমুর। যেমন সুন্দর হয়েছে তাদের সাজ তেমনি সুন্দর হয়েছে তাদের গানের গলা। একেবারে মিষ্টতায় ভরা। এক জায়গায় বসে একদম সুন্দরভাবে গান পরিবেশন করেছে তানি-মুনি। তারা এই বয়সে যেভাবে আলোড়ন ফেলেছে গানের জগতে তাতে সোশ্যাল নাগরিকরা বুকভরা ভালোবাসা ও আশীর্বাদে তাদের ভরিয়ে দিচ্ছেন আগামী দিনে এগিয়ে চলার জন্য।
এমন একটি গানের সাথে মাঝে মাঝে ভিডিওতে গ্রামের কিছু দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। এত সুন্দর ভাবে তারা গানের প্রত্যেকটি লাইন গিয়েছে যা শুনে মুগ্ধ হয়ে গেছে মানুষ। আর শুধু গান নয় গানের সাথে তাদের মুখের এক্সপ্রেশানও একদম অসাধারণ। ভিডিওটি গত ১১ মাস আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে কিন্তু বর্তমানে আবারও ভিডিওটি খুব পরিমাণে ভাইরাল হচ্ছে। ইউটিউব থেকে ভিডিওটি দেখেছেন ৪৪ হাজার মানুষ আর লাইক করেছেন ৮০২ হাজার মানুষ।